কাহিনী হয়ে ওঠার আগে - করাতকল

সর্বশেষ:

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

কাহিনী হয়ে ওঠার আগে

-ঋষি এস্তেবান

রাজধানী থেকে ছেড়ে আসা রাতের গাড়ি চারপথের জুডুলের উপর একটু থামতেই বাসের হেলপার তার পিঠে অশ্লিল এক ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়। সাথে সাথেই হেলপারের ধমাধম কয়েকটা চড় খেয়ে গাড়িখানা ছুটে যায় সীমান্তের দিকে ...।
চারপথের জুডুলের ডানপাশে উঁচু লাইট পোস্টের মাথায় জ্বলছে এক নিঃসঙ্গ বাতি। দৃশ্যত অপার্থিব তার সামান্য হলদে আলো ছড়িয়ে পড়ার আগেই শুষে নিচ্ছে ঘন কুয়াশা। অজানা আতঙ্কভরা অন্ধকারে ধুঁকতে ধুঁকতে সে পশ্চিম পাশের যাত্রী ছাউনির সিমেন্টের বেঞ্চে নিজেকে ধপাস করে বসিয়ে দেয়। তার বসে পড়া বেঞ্চখানা ঠান্ডা বরফ! ভয়াবহ হাড় ঝাঁকানো শীত তাকে কুঁকড়ে ফেলে। সে দু’হাতে নিজেকে জড়িয়ে উম দেয়ার চেষ্টা করে। শীতে অসাড় করে দেয়া দু’হাত সে বোগলে গুঁজে কিছুটা উত্তাপ খুঁজে পেয়ে খামচে ধরে।  নির্দয় শীত তাকে প্রবল কাঁপাতে থাকে ...।
সে আসছে রাজধানীর এক আমলার বাসায় ঝি গিরি থেকে সাময়িক ছুটি পেয়ে। এখন সে যেখানে পৌঁছেছে এখানে সে অপেক্ষা করবে সকালের লোকাল বাসের, যে বাস তাকে নিয়ে যাবে আরও উত্তরে তার জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকা মায়ের কাছে। হিমালয় থেকে নেমে আসা অতিকায় দানব শীত তাকে ঘেটি ধরে আচ্ছামত ঝাঁকাচ্ছে। যাত্রী ছাউনির পিছনের ঝোঁপে হাওয়ার নড়াচড়া তাকে থেকে থেকে চমকে দিচ্ছে, সে ভাবছে ‘রাতে আসা ঠিক হয়নি, কিন্তু ওদের যা স্বার্থপর স্বভাব ওদের কাছে কিছুই আশা করা যায় না। সকালে হয়তো ওরা মত পাল্টে ফেলতো আর যে কোন ছুতায় ছুটি বাতিল করে দিত।’
তার ভাবনা ঘুরতে ঘুরতে এসে থির হয় সাথের টোপলার উপর, এর ভিতর করে সে মায়ের জন্য কিছু উপহার এনেছে। নতুন শাড়ি একখানা, পুরানো শাড়ি দু’খানা, সায়া ব্লাউজ দু’সেট, বর্মিজ রক্ত রঙ স্যান্ডেল একজোড়া, মাথা ঠান্ডার সুগন্ধি তেল এক বোতল, তিনটা মেলামাইনের বাটি, দু’খানা থালা, মাঝারি চামুচ দু’খানা এসব জিনিস তার মায়ের জন্য দিছে গ্রাম থেকে আসা আমলার মা, আর তাকে দিছে ছালোয়ার কামিজ একসেট, স্যান্ডেল একজোড়া, সুগন্ধি সাবান দু’খানা, সে নিজে বাসের মধ্যে কিনেছে হাফ কেজি আঙ্গুর, রঙিন চিরুনি একখানা। এইসব সামগ্রী দিয়ে সে মাকে সাজাতে শুর করে। সুগন্ধি সাবান মেখে গোসল করে নতুন সায়া ব্লাউজ শাড়ি পরে লাল স্যান্ডেল পায়ে সুগন্ধি তেল মেখে চুল পরিপাটি আঁচড়ে মা বসে আঙ্গুর খাচ্ছে! আনন্দে তার চোখে জল গড়িয়ে নামে। সে দিব্যি দেখে এভাবে সাজলে আমলার ঢেপসি বউয়ের চেয়ে মা’কে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে! তার এসব ভাবনার মাঝেই তাকে হঠাৎ হঠাৎ ভয় দিচ্ছে কোন ছায়ার কেঁপে ওঠা বা রাতের নিজস্ব ফিসফাস! ভয়ের বেষ্টনির ফাঁকফোক দিয়ে বেরিয়ে  সে আবার ফিরে ফিরে ঢুকে যাচ্ছে তার ছোট ছোট ছন্দে লাফিয়ে চলা অজস্র স্বপ্নে। সে পা মেলে মায়ের কোলের ভিতর বসে আছে। আর পরম আদরে মা তার চুল বাঁধছে, সুগন্ধি তেলের ভুর ভুর মিষ্টি সৌরভে বাতাস মদীর। তাদের মা মেয়েকে ঘিরে পাড়া প্রতিবেশী অবাক!
সে আনন্দে উজাড় হয়ে বেশ জোর ফিসফিসিয়ে বলার সাথে চোখ ছোট বড় করে হাত নেড়ে চারপাশের সবাইকে বোঝাতে চাচ্ছে রাজধানী কি? কত শত হাজার রকম মানুষ সেখানে আছে। ‘মাটিরতে সুজা আকাশে উঠে গেছে বিশাল বিশাল বাড়ি, সে সব যে কত বড় বাড়ি কোয়ে বুঝানো যাবে না, আর কত যে দুকান পশার, সারাদিন রাত জমজমাট কি আর কবো এটএট্টা দুকান এ্যাতো বড় যে তুমি ভয় পায়ে যাবা, মোনে কর আমাগে তিন চারশো হাটের সব মালপত্তর যদি একঘরে ঢুকানু হয় তালি যিরাম, এ ঠিক সিরাম ব্যাপার। কি তার চেয়েও বেশি। সে হেনি ঢুকলি তুমার মোনে হবে গোলমাল বাধে গেছে, চ্যাচামেচি শুনে তুমি দৌড়ও দিতি পারো ভয়তে, এমন আজিব ব্যাপার। সে সব দু’কানে রাজ্যের এমন জিনিস নেই যা পাওয়া যায় না। জুতো ? আছে,  মাছ-তরকারি, হাড়ি-পাতিল ? আছে, জামাকাপড়, পাউডার সোনো ? আছে। সব আছে। মুটামুটি তুমি যা চাবা তার সব পাবা। এক দুকানের তে তুমি পাচশো বিয়ের বাজার কোরলিও দুকানের কোন মালই কোমবে না। বেগম সাহেবের সাথে আমি রোজ এইসব ভয়াবহ দুকানে যাই, মালপত্তর কিনি। আমি আর কি কি করি জানো?’ এই প্রশ্নটা তাকে দমিয়ে দেয়। তার কথা বলা হাত-পা নড়াচড়া থামিয়ে দেয় প্রশ্ন টা। নিজেকে সে দেখে নিজের ভিতরে ঢুকে, আর অনিবার্য আদেশগুলো বের হতে থাকে রহস্যময় কুয়াশার ভেতর থেকে ‘ঘর মোছ, এটা ধর, পানি দে, কাপড় কাচতে যা, থালা-বাটি ধো, তারপর কার্পেট ঝাড়– দিবি, টেবিলে খাবার দে’! হাতের একটা কাজ শেষ না হতেই চলে আসে আর এক টা কাজ। কোন থামাথামি নেই। শেষ রাত থেকে শুর হয়ে চলতেই থাকে গভীর রাত পর্যন্ত। এমনকি রাতেও চলে স্বপ্নে বাসন মাজা, কাপড় কাচা, হুমকি-ধমকি, বিধি-নিষেধ, সামলে চলা, ফাঁকা ঘরেও কারা যেন ধমকায়,  বকাবকি করে, টানা ধাপ্পড় মারে, ’কিন্তুক এসবের কথা মা-রে কওয়া যাবে না। মা করতি পারবে না কিছুই, কষ্ট পাবে খালি খালি। তারচে’ মারে কোতি হবে তারা খুব ভালো, তিন বেলা যত পার খাও, সুগন্ধি সাবানে নাও, বিকেলে নাস্তা কর, শুয়েবসে থাকা সারাদিন, মাঝে মধ্যে এট্টু আধটু কাজ, ওতো মানষি নিজির বাড়িও করে, মুটামুটি সুখিই আছি ’!  সুখিই আছি,কথাটা উচ্চারণের সময় একটা বড় শোকের নিঃশ্বাস তার বুক থেকে বেরিয়ে কুয়াশা হয়ে যায়।
‘তবে ঢাকায় যে কোন একটা দোকান দিতি পারলি খুব ভালো হয়’। কথাটা সে পথে বাসের মধ্যি শুনেছে খুব ভারী গলায়। যেন দৈবকথা। অথবা বাতাস নিজেই উপদেশমূলক ভাববাচ্যে কথাটা বলেছে তার উদ্দেশ্যে। ‘নানি কোইছে যারা পাপ করে না তারা তারা দৈবকথা শুনতে পায়। আমি কি পাপ করি? পাপ কারে কয়? কি কি কোরলি পাপ করা হয় ? আমার আর পাপ করার সুমায় কোই ? ধুয়াকাচা মাজা ঘষা কোরতি কোরতিই তো আমার জীবন শ্যাস, আমার তো হাতে ঘা হোইছে, আঙ্গুলির ফাঁকে ফাঁকে শাদা ফুসকুড়ি। হাতে ঘা হওয়া কোন পাপের ফল হতিও পারে। কয়দিন আগে ওগে ঘপাঘপ মিষ্টি খাতি দেখে আমারও মিষ্টি খাতি ইচ্ছে হোইছিলো, ইডা মোনে হয় এট্টা পাপ ?’ সামনে পিছনে ঘাড় ঘুরিয়ে গাড়ির ভিতরে কথাটা বলতে পারে এমন কাউকে না দেখে তার ধারণা শেকড় বের করে দাঁড়িয়ে গেল। এটা নিশ্চয়ই দৈবকথা। ’সে বার বার আউড়ে কথাটা মুখস্ত করে ফেলে। এ পর্যন্তই এসে তার স্বপ্নটা ছিড়ে যায়। ভোরের নামাজ পড়তে আসা তিন নাগরিক এখানে তাকে কুড়িয়ে পায় এবং তারা তাকে কয়েকটি চাছাছোলা প্রশ্ন করে তার অবস্থা বুঝতে পারে। আর তাকে নির্ভয় দিয়ে সাথে করে নিয়ে আসে পথের অন্যপাশে একখানা বড় ঘর দিয়ে আড়াল করা চায়ের দোকানে।
মাটির চুলার উপরে তিনটা বড় কেটলি আর একটা মোটা সরপড়া দুধেভরা মগ চাপানো। চুলা থেকে শাদা ধোয়া বেরোচ্ছে গলগল। আর ধোয়ার মাঝেই মুখ গুঁজে একটা বাঁশের চোঙে ফুঁ দিয়ে এক লোক আগুন জ্বালাবার কসরৎ করছে। তার মনে হল আগুন জ্বালাতে চেষ্টা করা লোকটার নাখচোখ নেই, না হলে এমন জ্বালাধরা ধোঁয়ার মধ্যে মুখ গুঁজে সে থাকে কি করে?
তাকে তিন নাগরিক দোকানের সামনের বেঞ্চে বসতে বলে। আর সে বসতে না বসতেই কুয়াশার ভিতর থেকে আচমকা বেরিয়ে এলো নীল পিকআপ ভ্যানটা। ব্রেক কষে খ্যাচ করে থামে দোকানের সামনে। সাথে সাথেই গাড়ি থেকে দাপিয়ে নেমে আসে কয়েকজন পুলিশ, তারা দোকানদারকে কড়া চা দেয়ার জন্য ধমক দেয়। তারপর পোটলাসহ বেঞ্চে বসা তার দিকে তাকিয়ে দু’বার ঠোঁট চেটে বেশ অন্তরঙ্গ সুরে প্রশ্ন করে দারোগা, এমন যেন ধর্মীয় শ্লোক বলির পশুর সামনে প্রথামাফিক বয়ান করছে কাপালিক।
‘কোথা থেকে?
ক্যানো এ সময় এখানে?
আর যাতিই বা হবে কুথায়?
নাম যেনো কি?
আর কাউকে দেখছি না যে?
সাথের আর সবাই কুথায়?’
সরল সংকোচের চাপে জড়সড় হলেও সে খুব ভদ্রভাবে দারোগার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেয়। খুব মনোনিবেশে তাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ দিয়ে চাটতে চাটতে দারোগা হেসে বলে, ‘বেশ বেশ বস। চা বিস্কুট খাও, কেচ বুঝতি পারিছি। এই বয়সটাই এমন, তাই বা বলি কেন? আমরাও তো ওই বয়সটা পার হোয়ে আসিছি। আমরা তো ওরকম কিছু করি নাই। আসলে জামানাডাই উল্টাপাল্টা, আমার মেয়েডাও তুমার বয়সি এবং স্বভাবের তুমার মত যা ইচ্ছা হয় করে বসে। এই তুমি যেমন পরে কি হোতি পারে তা চিন্তা না করেই একা রাজধানীরতে রাতে চলে আসিছো, সেও ঠিক এমন খামখেয়ালি, যা ইচ্ছা করে বসে। পরের কথা চিন্তা না করে কোন কাজ করা ঠিক না। যা হো তোমার সাথে আমাদের দেখা হয়ে গেল। না হলি কিযে হতো? হতি তো পারতো অনেক কিছুই। দেশের যা অবস্থা সে আর ভাবতি পারিনে। যা হোক এখন আর তুমার কোন ভয় নেই। তুমি যে দিক যাতি চাচ্ছো আমাদেরও নিয়ত সেদিকেই যাওয়া। আল্লাহ রাজিখুশি হলি সবই হতি পারে। আল্লাহ চায়তো এখনই তুমি তোমার মার কাছে চলে যাতি পারবা। আমরাও এট্টা ছাওয়াবের কাজ করার আনন্দ পাব।’
পুলিশ দেখলেই তার অশুভ ঘেন্না ঘেন্না লাগে, তিন নাগরিকও চাচ্ছে না সে পুলিশের খপ্পরে পড়–ক। কারণ সাধারণ চোর-ডাকাত-সন্ত্রাসীর চে’ পুলিশের সান্নিধ্যে সাধারণ মানুষ বেশি নিরাপত্তাহনতার আতঙ্কে ভোগে। সাধারণ চোর-ডাকাতকে জনগণ সংঘবদ্ধ হয়ে রুখে দিতে পারে। কিন্তু পুলিশ! চুরি-ডাকাতি-ধর্ষণ-খুন এহেন কুকাজ নেই যা করার দৃষ্টান্ত পুলিশের নেই। এবং তারা এসব কাজ কোন আড়াল-আবডালের তোয়াক্কা না করেই করে। কারণ তাদের কাজ  মানেই হচ্ছে সরকারি কাজ। যা করার জন্য সরকার তাদের আইন এবং অস্ত্রের যোগান দেয়। যার বিরোধিতা করা মানেই হচ্ছে আইনÑশৃঙ্খলা ভাঙ্গার আইনের প্যাঁচে পড়ে জেল-ফাঁসি, নির্যাতনসহ হাজার রকম হুজ্জতের ভিতর দিয়ে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনা। তবুও তিন নাগরিক চায়ের দোকানদার এবং ইতিমধ্যে নামাজ পড়তে আসা আরও কয়েকজনে মিলে মেয়েটাকে পুলিশের সাথে যেতে দিতে চাচ্ছে না। সে নিজেও চাচ্ছে বরং সকাল হোক, বাসেই যাওয়া যাবে। কিন্তু পুলিশের দল দায়িত্ব পালনের অজুহাতে তাকে এক ধরনের জোর করেই তুলে নিয়ে চলে যায়।
পুলিশের গাড়ির ভিতর ঘন অন্ধকার। লোহার ঠান্ডা বেঞ্চের উপর এক কোণায় সে নিজেকে দলা পাকিয়ে কুঁকড়ে বসিয়ে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু গাড়ির মুহুর্মুহু ঝাঁকিতে সে মাঝে মাঝেই ছিটকে উঠছে।
হঠাৎ দারোগা তাকে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘শীত করতাছে নাকি ? আসো আমরা গরম হোই’। সে ভয় পেয়ে বলে, ‘না- না, ঠিক আছে, ঠিক আছে।’
দারোগা তাকে আরও জোরে পেচিয়ে ধরে। আর তার বয়ঃসন্ধির অস্পুট স্তন পিশতে শুর” করে। সে ব্যাথায় আর আতঙ্কে কেকিয়ে ওঠে। পুলিশের দল খ্যাক খ্যাক হাসে। সে কাতর মিনতি করে ‘এসব কি কোরতিছেন? আপনি না বল্লেন আমি আপনার মেয়ের মত ? ’
দারোগা হেসে বলে, ‘ম্যায়ের মোতো কোচ্ছিস ক্যা, তুইতো আমার ম্যায়েই। তয় আমরা হচ্ছি আদিম যুগির বাসিন্দা, আমাগে সমাজে মেয়ে বাপ বলে কিছু নেই। আছে মাদী আর মদ্দা এর মাঝখানে কোন দাড়ি কমা নেই। কোনো বৈধ-অবৈধ নেই। চুপ করে ঘুমা ভয় পাচ্ছিস ক্যা ?
দারোগা তাকে এ পর্যায়ে টেনে হিঁচড়ে গাড়ির বরফ হয়ে থাকা লোহার পাটাতনের উপর বিছিয়ে তার উপর সওয়ার হয়। সে ছটফটিয়ে চিৎকার করে ওঠে। একজন পুলিশ তার পা চেপে ধরে। আর একজন হাত। অন্য একজন বিড়ির বোটকা গন্ধেভরা খসখসে মাফলার দিয়ে তার চিৎকার চেপে ধরে বেঁধে ফেলে। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে দারোগা তার জামা কাপড়গুলো টেনে ছিড়ে তাকে পিশতে শুর করে, মুহূর্তে সে জ্ঞান হারায় ...।
দারোগার পর পুলিশের দল চুপচাপ এক এক করে তার অসাড় দেহ’র উপর ধর্ষণ চালিয়ে যায়। সে আর নড়াচড়া দাপাদাপি করে বাধা দেয় না। তার শিথিল হাত-পা গুলো নেতিয়ে পড়ে থাকে। যে কারণে পুলিশের দল খুব খুশি। হঠাৎ দারোগা চিৎকার ওঠে, ‘ফজলু, ফজলু আয়।’
ড্রাইভার ফজলু, অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল এই মুহূর্তের জন্য। আহ্বান পাওয়া মাত্র সে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে এপাশে চলে আসে, এবং আবিষ্কার করে মেয়েটার নিঃশ্বাস বন্ধ।
নিজের প্যান্ট খুলতে খুলতে সে তার সাথীদের শুনিয়ে বলে, ‘মাগী মনে হয় মরে গেছে।’ দারোগা তার উপর রেগে যায়, ‘তুই সব সুমায় বেশি কথা কোস, আর বেশি বুঝিস।’ মরে গেছে না ? ওসব ভানাচি আমরা বুঝি না? ওসব রাজধানী ঠাপানু মাগী, তোর মতোন পঞ্চাশ ফজলুতে ওর নাস্তাও হয় না। তুই তাড়াতাড়ি তোর কাজ সারে গাড়ি স্টার্ট দে। ওদিক জামাত শুর হয়ে যাবেনে। জামাতে নামাজ পড়লি ছওয়াব বেশি। তোর লিকচার শুনে জামাত নষ্ট কোরতি চাইনে। ফজলু হেসে বলে, ‘মরা না  মরা আল্লার হাত। কোনো  মানুষ কি পারে অন্য মানষির জীবন দিতি বা নিতি ? যার য্যামুন লেখা তার মরণ সেভাবেই হবে। তাছাড়া মাগী  মরলিই বা আমার কি ? কও আমরা কি মরামাছ খাইনে নাকি ?’
গল্প হাসি তামাশার ভিতর দিয়ে মহাতৃপ্তিতে পুলিশের দল পর্যায়ক্রমে তার মৃত দেহর উপর বলাৎকার চালিয়ে যায় যতক্ষণ না তাদের ক্লান্তি আসে।  অতঃপর তারা ইয়াসমীনের চৌদ্দ বছরের লাশটা রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে গাড়ি হাঁকিয়ে চলে যায় ...।

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages